কার্ফুতে ব্যবসা বন্ধ, যৌনকর্মীকে মেরে তাড়ালো নিষিদ্ধপল্লীর মক্ষীরানিরা
শিলচর, ৭ জুন: নিষিদ্ধপল্লির মক্ষীরানিদের কাছে যৌনকর্মীরা একেকজন অর্থ রোজগারের মেশিন ছাড়া কিছু নয়। এদের আবেগ-অনুভূতি বা ভাবনা-চিন্তার কোনও দাম নেই তাদের কাছে। মেশিন যতদিন চলে ততদিন ঠিক আছে, চলা বন্ধ হয়ে গেলেই সমস্যা। শুরু হয়ে যায় অত্যাচার, অচল মেশিনকে পুষেই কি লাভ। তাড়িয়ে দেওয়া হয় মারপিট করে। করোনা পরিস্থিতিতে অন্যান্যদের মতো শিলচরের নিষিদ্ধপল্লির যৌনকর্মীদের কাজকর্ম বন্ধ। ফলে তাদের অত্যাচারের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বছর সাতাশের এক যৌনকর্মী অত্যাচারের ঠেলায় পালিয়ে যান তাদের ডেরা ছেড়ে। তার সূত্রে বেরিয়ে এসেছে মক্ষীরানিদের ভয়ঙ্কর অত্যাচারের কাহিনী।
পালিয়ে আসা যৌনকর্মীকে রাতে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় তারাপুর রেলস্টেশন এলাকায়। এক মহিলা উদ্দেশ্যবিহীন ভাবে ঘোরাঘুরি করছেন, এই খবর পেয়ে ড্রিম সেলিব্রেশন নামে এনজিওর কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে তারাপুর ফাঁড়ি পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করেন। উদ্ধারের পর মহিলা জানান, তার বাড়ি গুয়াহাটির নারাঙ্গী এলাকায়। পরিস্থিতির চাপে বছর পাঁচেক আগে কিন্তু নিষিদ্ধপল্লিতে এসে যৌনকর্মী হিসেবে কাজ শুরু করেন। মক্ষীরানিদের অধীনে যৌনকর্মী হিসেবে কাটছিল তার দিন। শুরুর দিকে খদ্দেরদের কাছে তার চাহিদা ছিল তুঙ্গে। তাকে ঘিরে উড়তো প্রচুর টাকা। তখন তিনি ছিলেন মক্ষীরানিদের নয়নের মনি। তবে সময় অতিবাহিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারে তার চাহিদা কিছুটা কমে গেলে বদলাতে থাকে ওদের মনোভাবও। যদিও অত্যাচার কখনও হয়নি।
গতবছর করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন-এর মাঝে কাজ কারবার অনেক দিন বন্ধ থাকলেও তাকে কেউ কিছু বলেনি। তবে এবার কার্ফু ঘোষিত হওয়ার পর কাজ কারবার বন্ধ হয়ে গেলে শুরু হয় অত্যাচার। এমনি এমনিতেই তাকে পোষে কি লাভ। একথা বলে মক্ষীরানিরা শুরু করে তার উপর অত্যাচার। সঙ্গে ঠিকমত দেওয়া হতো না খাবারও। তাই বাধ্য হয়ে শনিবার রাতে তিনি পালিয়ে যান। পুলিশের মাধ্যমে ওই মহিলাকে বর্তমানে রাখা হয়েছে শিলচরের এক হোমে। এনজিওর কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মহিলা তার বাড়িতে ফিরে যেতে চাইছেন। তাই শীঘ্রই তাকে বাড়ি ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
আরো দেখুন : আসছে তৃতীয় ঢেউ, এবার শিশুদের জন্য শুরু কোভিড ভ্যাকসিনের ট্রায়াল