যেমনটা হয়ে থাকে, হলও তাই। সোনাই কাজিডহর দ্বিতীয় খন্ডের শিশু ধ্রুবজ্যোতি নাথ অপহরণ ও হত্যাকাণ্ডের পর আসল রহস্য উদ্ঘাটনে কয়েকদিন জোর আওয়াজ উঠার পর দিন অতিক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বর্তমানে সব চুপচাপ। এরমধ্যে দু’দফা রিমান্ড”পর্বের পর ধৃত রাজীব চাষা ও তার সঙ্গী মনোদীপ রায় বর্তমানে হাজতে। আর তৃতীয়জন খোকা বাউরী করোনা আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। রাজীবদের হাজত গমন থেকে ধরেই নেওয়া যায়-ইতি পড়ে গেল তদন্ত প্রক্রিয়ায়। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, ঘটনার নেপথ্যে থাকা কোনও এক অধ্যায় কি থেকে গেল পর্দার আড়ালেই? লক্ষ্মীপুর দেওয়ান বাগানের বাসিন্দা রাজীব যতই দুধর্ষ অপরাধী হোক না কেন, এর আগে সে যেসব শিশু অপহরণ বা অন্যান্য অপরাধ করেছে সবই দেওয়ান বাগানের আশপাশ এলাকায়। এবার হঠাৎ করে সে তার পরিচিত মৃগয়া ক্ষেত্র ছেড়ে এত দূর সোনাই কাজিডহরে কেন অভিযান চালালো, এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠাটা খুবই স্বাভাবিক। আর স্রেফ মোবাইল চুরির জন্য তার ধ্রুবজ্যোতির বাড়িতে ঢোকা, এরপর শিশু দেখে পুরনো অভ্যাসবশত মুক্তিপণের লোভে তাকে অপহরণ, এমন কাহিনী বোধহয় “ঠাকুরমার ঝুলি” থেকেই বের হওয়া সম্ভব।
ঘটনার শুরু থেকেই একটা চর্চা চলছে, রাজীবের সঙ্গে ধ্রুবজ্যোতির বাবা দেবজ্যোতি নাথের অতি পরিচিত কেউ জড়িত রয়েছে এই ঘটনায়। দেবজ্যতি নিজেও বারকয়েক বলেছেন, স্থানীয় অপরাধীকে যেন শনাক্ত করা হয়। এমন সব চর্চা ও অভিযোগের মাঝে আরও তথ্য হল, দেবজ্যোতি নাথের ঘরের জানালায় গ্রিল না থাকার কথাও রাজীব জানতো ভালোভাবেই। না জানলে নিশ্চয়ই স্লাইডিং জানালা খোলার রাস্তায় যেত না সে। এ নিয়েও চর্চা চলছে সেই শুরু থেকেই।এসবের পাশাপাশি আবার যে লোকটি চোস্ত হিন্দিতে ফোন মারফত ধ্রুবজ্যোতির পরিবারের কাছে অর্থ দাবি করেছিল, সেই লোকটি যে রাজীব নয়, এ নিয়েও বিশেষ সন্দেহ থাকার কথা নয়। আর ঘটনার পরবর্তীতে ধ্রুবজ্যোতির বাড়িতে পুলিশ পৌঁছার খবর যে লোকটি প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পেয়ে গিয়েছিল, এর প্রমাণও রয়েছে ওই “কল রেকর্ডিং”-এ।
এই পরিস্থিতিতে রাজীবের কাহিনী মেনে নিয়ে পুলিশ যদি তদন্ত রিপোর্ট তৈরি করে ফেলে তবে আমজনতার ভরসা কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা সহজেই অনুমেয়। যাবতীয় প্রক্রিয়ার পরও প্রশ্ন থেকেই যাবে, তদন্তকারী অফিসার সোনাই থানার ওসি ভার্গব বরবরা ও কাছাড় পুলিশের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে। যেমনটা থেকে গেছে বিগত দিনে এ জেলার কুম্ভীরগ্রামের জঙ্গলে দুই তরুণীর ধর্ষণ ও হত্যাকান্ড সহ শিলচর ফাস্ট লিংক রোড ও সেকেন্ড লিংক রোডর দুটি জোড়া হত্যাকান্ড সহ অন্যান্য কিছু অপরাধমূলক ঘটনাকে ঘিরে।#
ধ্রুবজ্যোতি অপহরণ ও হত্যাকান্ডঃ নেপথ্যে থাকা অধ্যায় কি থাকবে পর্দার আড়ালেই?
Published:
First published