21 C
Guwahati
Saturday, March 25, 2023
More

    ১৭ দিনের মেয়ের চিকিৎসার জন্য চার বছরের ছেলেকে বিক্রির চেষ্টা বাবার !

    শিলচর, ১১ ডিসেম্বর : এক সন্তানের চিকিৎসা করাতে অন্য সন্তানকে বিক্রির জন্য ক্রেতা খুঁজছিলেন বাবা। বৃহস্পতিবার দুপুরে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল চত্বরে ক্রেতা খোঁজার সময় এক নিরাপত্তারক্ষীর নজরে পড়ে যান তিনি। তাই ভাগ্যক্রমে সন্তান বিক্রির ঘটনা ঘটেনি। শ্যামল দাস নামে ওই ব্যক্তিকে বর্তমানে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন কিছু লোক। চিকিৎসার জন্য তাঁর অসুস্থ সন্তানকে গুয়াহাটিতে পাঠানোর তোড়জোড় চলছে। শুক্রবার ‘হাইলাকান্দি সম্মেলন’ নামের এক সংস্থা আর্থিক সাহায্য দিয়ে তাদের গুয়াহাটি পাঠানোর ব্যবস্থা করেছে।
    পেশায় রিকশাচালক শ্যামল দাস ত্রিপুরা আমবাসা এলাকার বাসিন্দা। শিলচরে থেকে তিনি রিকশা চালান। দিন কুড়ি আগে তার অন্তঃসত্ত্বা পত্নী প্রতিমা দাসকে ভর্তি করান শিলচর মেডিক্যালের মাদার অ্যান্ড চাইল্ড কেয়ার হসপিটালে। ১৭ দিন আগে প্রতিমা ওই হসপিটালে এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। ওই কন্যা সন্তানের গলায় রয়েছে টিউমার। বৃহস্পতিবার দুপুরে মেডিক্যালে কর্তব্যরত এক নিরাপত্তাকর্মী পাপ্পু নুনিয়া দেখেন, শ্যামল বছর চারেকের‌ এক শিশুপুত্রকে কোলে নিয়ে তাকে বিক্রির জন্য লোকজনের সঙ্গে কথা বলে ক্রেতা খুঁজছেন। যাদের সঙ্গে শ্যামল কথা বলছিলেন, তারা ব্যাপারটায় বিশেষ গুরুত্ব না দিলেও চমকে ওঠেন পাপ্পু। সঙ্গে সঙ্গে তিনি শ্যামলকে পাকড়াও করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। সে সময় খবর পেয়ে হাজির হন সংবাদকর্মীরাও। জিজ্ঞাসাবাদের জবাবে শ্যামল জানান, কোলের শিশুপুত্র তার ছেলে, নাম বিশু। তার সদ্যোজাত শিশুকন্যাকে চিকিৎসার জন্য গুয়াহাটি নিয়ে যাবার কথা বলেছেন চিকিৎসকরা। কিন্তু অর্থাভাবে তার পক্ষে তা সম্ভব হয়ে উঠছে না। তাই তিনি চাইছেন বড় ছেলেকে বিক্রি করে যদি কিছু টাকা পাওয়া যায়, তবে তা দিয়ে গুয়াহাটি নিয়ে চিকিৎসা করাবেন মেয়ের।
    এক সন্তানের চিকিৎসার জন্য কেন অন্য সন্তানকে বিক্রির চেষ্টা, এনিয়ে তার বক্তব্য, ছেলেকে কেউ কিনে নিয়ে গেলে সে হয়তো তার কাছে ভালো থাকবে। আর বিক্রিমূল্যে হয়ে যাবে মেয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা। তার বক্তব্য শুনে সেখানে উপস্থিত স্থানীয় যুবক নাজিম উদ্দিন লস্কর সহ অন্যান্যরা উদ্যোগী হয়ে চাঁদা তুলে দেন হাজার পাঁচেক টাকা। তবে ঘটনার গুরুত্ব বুঝে নিরাপত্তারক্ষী পাপ্পু নুনিয়া শ্যামলকে নিয়ে যান মেডিক্যালের অধ্যক্ষ ডা: বাবুলকুমার বেজবরুয়ার কাছে। অধ্যক্ষ সবকিছু শুনে জানান, শ্যামল যাতে শিশুকন্যাকে চিকিৎসার জন্য গুয়াহাটি নিয়ে যেতে পারেন এর জন্য এনএইচএম-এর তরফে বিনামাশুলে একটি অ্যাম্বুলেন্সের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। অধ্যক্ষ সঙ্গে অবশ্য এ কথাও জানান, বিশু নামে যে শিশু পুত্রকে শ্যামল বিক্রি করতে চাইছিলেন, সে বাস্তবিকই তার ছেলে কিনা এটাও খতিয়ে দেখা হবে। যদিও এদিন ছোট্ট বিশুকে শোনা যায় শ্যামলকে বাবা বলেই সম্বোধন করতে।

    Published:

    Follow TIME8.IN on TWITTER, INSTAGRAM, FACEBOOK and on YOUTUBE to stay in the know with what’s happening in the world around you – in real time

    First published

    ট্ৰেণ্ডিং