হারানো পত্নীকে ফিরে পেতে কালীমন্দিরে হাত কেটে রক্ত উৎসর্গ করলেন স্বামী
শিলচর, ২৬ এপ্রিল : সন্ধানহীন পত্নী। হারিয়ে যাওয়া পত্নীর সন্ধানে পুলিশের সাহায্য চেয়ে থানায় থানায় ঘুরেও কোনও সুরাহা পাননি স্বামী। অবশেষে কালী মন্দিরে গিয়ে নিজের হাত কেটে রক্ত দিলেন এক যুবক। টিংকু শব্দকর নামে এই যুবক শিলচর তারাপুর নিউ কলোনির বাসিন্দা। তার পত্নীর নাম সুপ্রিয়া সিনহা (শব্দকর)। রবিবার দুপুরে টিংকু তারাপুর রেলস্টেশন এলাকায় রক্তাক্ত অবস্থায় হাতে পত্নীর ফটো নিয়ে লোকজনকে দেখিয়ে দেখিয়ে তার সন্ধান চেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে এভাবে ঘুরে বেড়াতে দেখে জিআরপি জওয়ানরা তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। দেখা যায় তার বাম হাতে ব্লেড জাতীয় কোনও ধারালো অস্ত্রের একাধিক আচড়ের চিহ্ন। রক্ত বেরোচ্ছিল সে সব ক্ষত থেকেই। তখন জিআরপিএফ জওয়ানরা তার কিছুটা পরিচর্যা করে হাসপাতালে যাবার জন্য বলেন। কিন্তু পত্নী বিরহে কাতর টিংকুর যেন এসব কথা শোনারই ইচ্ছে ছিল না।
টিঙ্কু জানান, পত্নী সুপ্রিয়া প্রায়ই বাড়ি থেকে বেরিয়ে ফেরেন অনেক রাতে। এ নিয়ে জিজ্ঞেস করলেও কোনও সদুত্তর দেন না। গত ২২ এপ্রিল রাতে এভাবে দেরি করে ফেরার পর রাগের মাথায় তিনি পত্নীকে কিছুটা মারপিট করেন। এসবের পরদিন ২৩ এপ্রিল সকালে মেডিক্যালে গিয়ে চিকিৎসা করানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন পত্নী। এরপর আর ফেরেননি। পত্নীকে খুঁজে না পেয়ে পরদিন তিনি যান সদর থানায় মিসিং রিপোর্ট করতে। সদর থানা থেকে তাকে পাঠানো হয় মালুগ্রাম পুলিশ ফাঁড়িতে। সেখানে গিয়ে মিসিং রিপোর্ট করলেও পুলিশ কোনও গুরুত্ব দেয়নি। একজন পুলিশ কর্মী পত্নীকে খুঁজে দেওয়ার নামে তার কাছে তিনশত টাকা দাবি করেন বলেও অভিযোগ করেন টিংকু।
পুলিশের দরবারে গিয়ে পত্নীকে ফিরে পাবার ব্যাপারে কোনও আশা না পেয়ে এবার তিনি দ্বারস্থ হয়েছেন ঈশ্বরের। এদিন দুপুরে অন্নপূর্ণা ঘাট এলাকায় দাস পদবীর এক ব্যক্তির বাড়ির কালী মন্দিরে গিয়ে দেবী কালীর উদ্দেশ্যে হাত কেটে উৎসর্গ করে আসেন রক্ত। তার আশা, রক্তে তুষ্ট হয়ে মা কালী অবশ্যই ফিরিয়ে এনে দেবেন পত্নীকে।
আরো দেখুন : শিলচরে বিমানযাত্রীদের কোভিড পরীক্ষায় অব্যবস্থা চরমে, উদাসীন প্রশাসন