25 C
Guwahati
Saturday, March 25, 2023
More

    শিলচর মেডিক্যালের সিসিএল-এ অবাধে চলছে প্রাইভেট ল্যাবের টেস্টিং

    শিলচর, ৩ ডিসেম্বর : প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো নেই। অথচ শিলচরে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে ওঠছে ল্যাবরেটরি। কিন্তু পরিকাঠামো ছাড়া এতে বিভিন্ন টেস্টিং হয় কিভাবে? এ এক লক্ষ টাকার প্রশ্ন। এর সূত্র ধরে উঠে এসেছে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের “সেন্ট্রাল কম্পোজিট ল্যাবরেটরি (সিসিএল)”-র প্রসঙ্গ। অভিযোগ সিসিএল-এর একাংশ কর্মী-টেকনিশিয়ানের সঙ্গে গোপন যোগসাজশের মাধ্যমেই রোগীদের সংগৃহীত নমুনার টেস্টিং করিয়ে নেয় শহরের প্রাইভেট ল্যাবরেটরিগুলো। স্বাভাবিকভাবেই এক্ষেত্রে লেনদেন হয়ে থাকে মোটা অংকের অর্থ। একটি ছোট কাউন্টার, সঙ্গে রক্ত সহ অন্যান্য নমুনা সংগ্রহের জন্য আনুষঙ্গিক কিছু সামগ্রী এবং দুই-তিন জন কর্মী। শিলচরে অনেক ল্যাবরেটরিতে এর চেয়ে বেশি কিছুই নেই। এর পরও দেখা যায় এসব ল্যাবরেটরিতেই হয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের জটিল টেস্টিংও।

    জানা গেছে, কাউন্টার সর্বস্ব কিছু ল্যাবরেটরিতে রোগীদের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করার পর সাধারণত তা টেস্টিং করানো হয় বড় মাপের কোনও বেসরকারি ল্যাবরেটরিতে। তবে এ ক্ষেত্রে লাভের হার খুবই কম। তাই জটিল, মহার্ঘ টেস্টিং-এর ক্ষেত্রে কাউন্টার সর্বস্ব ল্যাবরেটরিগুলোর প্রথম পছন্দ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের “সেন্ট্রাল কম্পোজিট ল্যাবরেটরি (সিসিএল)-ই। সেখানকার একাংশ কর্মী তথা টেকনিশিয়ান-এর সঙ্গে বোঝাপড়া করে গোপনে করিয়ে নেওয়া হয় টেস্টিং। সংশ্লিষ্ট কর্মী বা টেকনিশিয়ানদের ভাগ দিয়ে রোগীদের কাছ থেকে আদায়কৃত “ফি”-র বাকি অংশ পুরোটাই লাভ। আর সিসিএল-এর যেসব কর্মী বা টেকনিশিয়ান এই কাজ করে থাকেন, অতিরিক্ত লাভের আশায় তারাও মেডিক্যালের রোগীদের নমুনার আগে বেসরকারি ল্যাবরেটরিগুলোর নমুনা পরীক্ষার ক্ষেত্রেই বেশি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। এভাবে সরকারি ব্যায়ে টেস্টিং করিয়ে মোটা অংকের অর্থ পকেটে ভরার কারবার চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরেই।

    অধ্যক্ষ ডাঃ বাবুলকুমার বেজবরুয়া।

    এই জোচ্চুরি রুখতে সম্প্রতি মেডিকেলের সিসিএল-এ চালু করা হয়েছে “বারকোড সিস্টেম”। টেস্ট টিউবে বারকোড থাকা বিশেষ ধরনের স্ট্রিপ লাগানো না হলে টেস্টিং মেশিনে নমুনা পরীক্ষা করা সম্ভব নয়। তবে জোচ্চুরি রুখতে যতই ব্যবস্থা নেওয়া হোক না কেন, এর ফাঁক গলে সংশ্লিষ্ট চক্র নিজেদের কারবার  ঠিকই চালিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ। মেডিক্যালের এক সূত্র জানান, বারকোড সিস্টেম চালু হওয়ার পর জোচ্চুরি অনেকটা কমেছে ঠিক। আগে কমিশনের বিনিময়ে কিছু কিছু ল্যাবরেটরিতে প্রতিদিন সংগৃহীত সব নমুনারই টেস্টিং হতো সিসিএল-এ।  একাংশ কর্মী-টেকনিশিয়ান যারা এই কাজ করতেন বা করে থাকেন তারা এসব টেস্টিং সেরে তবেই হাত লাগাতেন মেডিক্যাল এর রোগীদের নমুনা টেস্টিং-এ। বর্তমানে বারকোড সিস্টেম চালু হওয়ার পর আগের মতো অবাধে এসব কাজ সম্ভব হচ্ছে না। পরিকাঠামো না থাকা ল্যাবরেটরিগুলো পরিস্থিতির চাপে লাভ কম হওয়া সত্বেও ছোটখাটো টেস্টিং করিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে বড় মাপের বেসরকারি ল্যাবরেটরিতেই। কিন্তু জটিল মহার্ঘ্য টেস্টগুলো করানো হচ্ছে সেই সিসিএল-এই।

    বারকোড সিস্টেম চালু হওয়ার পরও কিভাবে সম্ভব হচ্ছে তা? এনিয়ে মেডিকেল এর সূত্রটি বলেন, ওই যে মাঝে মাঝেই বারকোড সিস্টেম-এ কারিগরী সমস্যা দেখা দেয়। একি আর এমনিতে এমনিতেই হয়। এই সুযোগেই করিয়ে নেওয়া হয় কিছু জটিল মহার্ঘ টেস্ট।এ নিয়ে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ ডা: বাবুলকুমার বেজবরুয়াকে জিজ্ঞেস করলে তিনি স্বীকার করেন, আগে সিসিএল-এ এমন কাজকর্ম চলার অভিযোগ ছিল। এসব বন্ধেই চালু করা হয়েছে বারকোড সিস্টেম। তবে স্বাভাবিক কারণেই অনেক সময় বারকোড সিস্টেমে সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে। এবার অভিযোগ যখন উঠেছে, তখন অবশ্যই খোঁজ নিয়ে দেখবেন। প্রমাণ পেলে অবশ্যই এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।

    Published:

    Follow TIME8.IN on TWITTER, INSTAGRAM, FACEBOOK and on YOUTUBE to stay in the know with what’s happening in the world around you – in real time

    First published

    ট্ৰেণ্ডিং