নয়াদিল্লি, ১৪ সেপ্টেম্বর : করোনার ভয়াবহতার মধ্যেই সোমবার শুরু হয়েছে সংসদের বাদল অধিবেশন। অধিবেশনের প্রথম দিনেই পূর্ব লাদাখে চিনা আগ্রাসন নিয়ে লোকসভায় মুলতুবি প্রস্তাব আনেন কংগ্রেস সাংসদ অধীররঞ্জন চৌধুরী এবং কে সুরেশ। এছাড়াও ১২ জন নিট পরীক্ষার্থীর আত্মহত্যা নিয়ে লোকসভায় মুলতুবি প্রস্তাব আনে ডিএমকে এবং সিপিএম। এ নিয়ে শুরু হয় হট্টগোল।এর ফলে অধিবেশন শুরু হওয়ার ২০ মিনিট পরেই এক ঘন্টার জন্য অধিবেশন মুলতুবি করেন স্পিকার।
এদিন সকালে বেধে দেওয়া সব নিয়ম, শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে মুখে মাস্ক-সহ অন্যান্য সতর্কতা মেনেই সকাল থেকে শুরু হয়েছে সংসদের বাদল অধিবেশন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিংহ, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডঃ হর্ষবর্ধন সহ প্রত্যেক সাংসদের মুখেই ছিল মাস্ক, বজায় রাখেন সামাজিক দূরত্ব। অধিবেশনের সূচনায় সদ্য প্রয়াত প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়, পণ্ডিত যশরাজ, ছত্তিশগড়ের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অজিত যোগী, মধ্যপ্রদেশের রাজ্যপাল লালজি ট্যান্ডন, উত্তর প্রদেশের মন্ত্রী কমল রানি এবং চেতন চৌহান সহ গতকাল প্রয়াত প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রঘুবংশ প্রসাদ সিংহের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। গত মার্চ মাস থেকে এযাবৎ দেশের সুরক্ষায় আত্মবলিদান দেওয়া সুরক্ষা বাহিনীর জওয়ানদের শ্রদ্ধা জানান লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা। করোনা-যোদ্ধাদেরও স্মরণ করেছেন তিনি।
প্রথা অনুযায়ী অধিবেশন শুরুর আগে একটা বার্তা থাকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির। এ দিন সকালে প্রধানমন্ত্রী সেনাদের পাশে দাঁড়ানোর কথা বলে লাদাখে ভারত আর চিনের মধ্যে সাম্প্রতিক উত্তেজনার উদ্দেশে বার্তা দেন। তিনি বলেন, ‘আশা রাখি যে গোটা সংসদ ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই বার্তাই দেবে যে গোটা দেশ সেনার পাশেই রয়েছে।’ গত কয়েক মাসে যেভাবে সীমান্তে চিনের সঙ্গে ভারতের সংঘাত হয়েছে তাতে এই বিষয়টি এবারের অধিবেশনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হতে চলেছে। তাই অধিবেশনের আগে নিজের বার্তায় সেই চিন প্রসঙ্গই তুলে আনলেন প্রধানমন্ত্রী।মোদি বলেন, ‘আমাদের সেনাবাহিনী অসীম সাহস, নিষ্ঠা ও দেশের প্রতি আত্মত্যাগের ভাবনা থেকে সীমান্তে মজবুত দেওয়াল হয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাঁরা কঠিন উচ্চতায় রয়েছেন। কিছুদিন পরেই সেখানে তুষারপাত শুরু হবে। তাই আমার বিশ্বাস, এই অবস্থায় সাংসদরা এক হয়ে একটা বার্তা দেবেন, যে সেনার পাশে শক্তভাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে গোটা দেশ।’ মোদির এই বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার চিনের বিরোধিতা প্রসঙ্গে সব দলের কাছে একতার বার্তা দিতে চান তিনি।