শিলচর ২ ডিসেম্বরঃ প্রতিবেশী রাজ্য মেঘালয়ে বাঙালিদের ওপর নির্যাতন এখন পুলিশি পর্যায়ে উত্তরণ ঘটেছে।ইদানীংকালে একের পর এক নির্যাতনের ঘটনায় সেই রাজ্যে বসবাসকারী ও রাজ্যের মধ্য দিয়ে চলাচলকারী বাঙালিরা আতংকিত। মঙ্গলবার মেঘালয়ের জোয়াই জেলে কাছাড় জেলার কাটিগড়ার বরইতলির দিলোয়ার হোসেন ওরফে সাদ্দাম নামের এক লরি চালকের রহস্যজনক মৃত্যু ঘটেছে। মেঘালয় পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়ে এই চালকের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দিলোয়ারের বাবা সামসুল হক। এই নির্মম মৃত্যুর জন্য পুলিশের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে নিরপেক্ষ তদন্তক্রমে দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন সামসুল হক।
দিলোয়ারের বাবা সামসুল এআইইউডিএফ-এর কাছাড় জেলা কমিটির সভাপতি সামিনুল হক বড়ভুইয়া, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক খলিল উদ্দিন মজুমদার সহ আরও কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে নিয়ে কাছাড়ের পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে মেঘালয়ের কেলিরিয়াহাটের ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন।
এক এজাহারে সামসুল হক অভিযোগ করেছেন, তাঁর পু্ত্র সাদ্দাম পেশায় লরি চালক। গত ২৯ নভেম্বর সে লরি (এম এল -০১-এ ই -০৫৪১) নিয়ে মেঘালয়ের উদ্দেশে রওনা হয়। সেদিন মেঘালয়ের তানসেনে পৌছার পর কঙ মনবা নামের এক লাইন হোটেলের মালিক ও তার স্বামী জোর করে ট্রাক থেকে নামিয়ে বেদম মারধর করে একটি মারুতি (এমএল-০৪সি -২৯৬২) কারে উঠিয়ে নিয়ে যায়।পরে তাঁকে কেলেরিয়াহাট থানায় সমঝে দেওয়া হয়। পরে জোয়াই থানার পুলিশের মাধ্যমে আদালতে তোলা হয়।আদালতের নির্দেশে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়।
এদিকে মঙ্গলবার সকাল দশটা নাগাদ জোয়াই জেলের পুলিশ পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তি মোবাইল ফোনে জানায়, সাদ্দামের নাকি মৃত্যু হয়েছে। এই খবর পেয়ে অসহায় হয়ে সামসুল এআইইউডিএফ নেতা খলিল উদ্দিন মজুমদার ও সামিনুল হক বড়ভুইয়া সহ স্থানীয় কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে নিয়ে কাছাড়ের পুলিশ সুপারের সঙ্গে দেখা করে কেলেরিয়াহাট পুলিশ সুপারকে অভিযোগ নামা পাঠান। সেখানে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হতে অপারগ হওয়ায় সে রাজ্যের পুলিশ সুপারের মাধ্যমে একটি মামলা নথিভুক্ত করে বিচার বিভাগীয় হেফাজতে মৃত্যুর তদন্তের দাবি জানিয়েছেন। কাছাড়ের পুলিশ সুপার অভিযোগনামা মেঘালয়ে পাঠানো ছাড়াও ব্যক্তিগত ভাবে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করার আশ্বাস দেন।
এদিকে মেঘালয়ে অসমের লরি চালকের পুলিশি হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনার খবর পেয়ে এআইইউডিএফ নেতা সাংসদ মওলানা বদরুদ্দিন আজমল মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী করনাড সাংমার সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ ব্যক্ত করেন এবং তদন্ত করে দোষীদের কঠোর সাজার দাবি জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, গতকাল বিকেলে শিলঙের নিগ্রিমস হাসপাতালের সামনে নিখিল দে নামের এক গাড়ি চালককে নির্মমভাবে খুন করা হয়।