হাইলাকান্দি, ২৪ ডিসেম্বর : বরাক উপত্যকার তিন জেলার সরকারি কাজকর্মের পর্যালোচনা করলেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল।বুধবার বিজেপি রাজ্য অধিবেশনের ফাঁকে মুখ্যমন্ত্রী হাইলাকান্দি জেলাশাসকের কার্যালয়ে এই বৈঠকে মিলিত হন। তিনি জানান, রাজ্য সরকারের কাছে হাইলাকান্দি জেলার গুরুত্ব অপরিসীম। কেননা, প্রধানমন্ত্রী উচ্চ অভিলাষী জেলার তালিকায় রয়েছে হাইলাকান্দি। লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, হাইলাকান্দি জেলার তিন বিধানসভা আসনের একটিতেও শাসক দলের প্রতিনিধি নেই। এরপরও মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল বারবার হাইলাকান্দিতে আসেন, খোঁজখবর নেন। লকডাউন পর্বেও তিনি এসেছিলেন। ব্যতিক্রম ঘটেনি এবারও। বুধবার বেলা ৩টা নাগাদ তিনি জেলাশাসকের কার্যালয়ে তিন জেলার জেলাশাসক সহ সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠকে বসেন। সঙ্গে ছিলেন মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য। তিনি কাছাড়, করিমগঞ্জ ও হাইলাকান্দি’র জেলাশাসকদের সরকারি প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়নের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বিভিন্ন বিভাগের কাজের পর্যালোচনা করেন।

মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল এদিন বিদ্যুৎ পরিষেবা’র উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে তিন জেলাশাসক সহ এপিডিসিএল-এর আধিকারিকদের উপত্যকার তিন জেলায় উন্নত বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রদান এবং এখন পর্যন্ত যে সব গ্রামে বৈদ্যুতিকরণ হয়নি তা যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সম্পন্ন করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন।উপত্যকায় জল জীবন মিশনের আওতায় বিশুদ্ধ পানীয়জল বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর্সেনিক মুক্ত জল পৌছে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে নির্দেশ দেন তিনি। এছাড়াও স্বচ্ছ ভারত অভিযানের অন্তর্গত বাড়ি বাড়ি শৌচাগার নির্মাণের কাজ দ্রুত সম্পন্ন করতে জেলাশাসকদের নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
অন্যদিকে ২০২২ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির স্বপ্ন অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় সবার জন্য ঘর তৈরির কাজ সম্পন্ন করে গৃহহীনদের পাকাবাড়ি উপহার দেওয়ার প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। হাইলাকান্দি’র জেলাশাসক মেঘনিধি দাহালকে মুখ্যমন্ত্রী বনবাসীদের সবধরনের সরকারি সুবিধা পৌছে দেওয়ার পাশাপাশি একটি করে আদর্শ গ্রাম তৈরি করে তুলতে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলেন। এছাড়া অবৈধ মাদক কারবারিদের শক্ত হাতে দমন করতে দক্ষিণ আসাম রেঞ্জের ডিআইজি সহ তিন জেলার পুলিশ সুপারদেরকে নির্দেশ কঠোর পদক্ষেপ করার নির্দেশ দেন।
এছাড়াও উপত্যকার যাতায়াত ব্যবস্থা নিয়েও পর্যালোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। তিন জেলায় ন্যাশনাল হাইওয়ের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন। পাশাপাশি ধলেশ্বর থেকে মিজোরাম সীমান্ত পর্যন্ত চলমান কাজের তথ্য নেন এবং সীমান্ত এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সম্পর্কে বিএসএফ কমান্ডেন্ট এবং ডিআাইজি ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে আলোচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এছাড়াও বিভিন্ন সরকার বিভাগের চলতি প্রকল্প সম্পর্কে অবগত হন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনয়াল। তিনি করিমগঞ্জ জেলার ল্যাটিটিলা-ডুমাবাড়ি ইন্দো-বাংলা সীমান্তে স্মার্ট ফেন্সিংয়ের কাজ সম্পর্কেও পর্যালোচনা করেছেন বলে সরকারি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। এদিনের পর্যালোচনা বৈঠকে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য, বিধায়ক সুজামউদ্দিন লস্কর, বিধায়ক নিজামউদ্দিন চৌধুরী, জেলা উন্নয়ন কমিশনার, অতিরিক্ত জেলাশাসক, জেলা পরিষদের সিইও এবং তিন জেলার বিভিন্ন বিভাগের পদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন।
আরো দেখুন : করিমগঞ্জে মেগা বৈঠকের অন্যতম মুখ আ্ঙুরলতা ডেকা, সেলফির ঝড়!