শিলচর, ২০ অক্টোবরঃ রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের তৎপরতার মাঝেও অসম-মিজোরাম সীমান্তের লায়লাপুরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।রবিবার মাঝরাতে ফের হামলা চালায় মিজো দুষ্কৃতীরা। তাদের হিংসার আগুনে একটি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে যায়। জানা গেছে, লায়লাপুর পুলিশ ফাঁড়ি থেকে প্রায় পাঁচ’শ মিটার দুরে থাকা একটি ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয় উগ্র মিজোরা। পুলিশের চোখের সামনে দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে ঘরটি। তবে ঘরের মালিকের নাম জানা যায়নি। নতুন করে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় পরিস্থিতি জটিল রূপ নিয়েছে। অগ্নি সংযোগের পর স্থানীয়রা রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। এভাবে মিজো আগ্রাসন চলতে থাকলে পরিস্থিতি অন্য দিকে মোড় নিতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এদিকে, সীমান্ত এলাকা অগ্নিগর্ভ থাকায় মিজোরামে পণ্য বোঝাই লরি নিয়ে যেতে চাইছেন না চালকরা। প্রশাসন নিরাপত্তার কথা বললেও কতটুকু সুনিশ্চিত রয়েছে এমনটা প্রশ্ন উঁকি মারছে চালকদের মনের কোণায়। লরিচালকরা ১৯৮৪ সালের কথা উল্লেখ করে বলেন, সেসময় মিজোরামের বিভিন্ন প্রান্তে অমিজোদের লরি পোড়ানো হয়েছে। চালকরাও আহত হয়েছেন। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে মিজোরামে যেতে কোনও ভাবেই সাহস পাচ্ছেন না বলে জানালেন আটকে পড়া স্থানীয় চালকরা। তারা বলেন, আগে সমস্যার সমাধান হোক। মিজোরা প্রতিনিয়ত অসমের দিকে এগিয়ে আসায় চালকদের মধ্যে আতঙ্কের বেড়ে ওঠে। সোমবার টিকরি এলাকায় মিজো প্রশাসনের সহযোগিতায় এক্সেভেটর দিয়ে মাটির কাজ করছে মিজোরা।

অন্যদিকে, মিজো আগ্রাসনের জন্য শুক্রবার রাত থেকে লায়লাপুর সীমান্তে আটকে পড়েছে শ’শ’ পণ্য বোঝাই লরি। এতে মিজোরাম সরকারও একটু নরম মনোভাব দেখাতে শুরু করে। চালক ও গাড়ির সম্পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়া হবে বলে এক বিবৃতিতে জানায়। এছাড়া তিন সংগঠন যৌথভাবে এক বিবৃতিতে একই কথা উল্লেখ করে মিজোরামে প্রবেশে স্বাগত জানায়। এদিন বিষয়টি নিয়ে দুই রাজ্যের প্রশাসনিকস্তরে লায়লাপুর বিট অফিসে এক বৈঠক হয়। বৈঠকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে লরি গুলো নেওয়ার সিদ্ধান্তে একমত হন দুই রাজ্যের প্রশাসনিক আধিকারিকরা। কিন্তু বৈঠকে চালকদের মধ্যে প্রতিনিধিত্ব করা চারজন মেনে নিতে পারেনি সিদ্ধান্তটি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পুলিশসুপার বিএল মিনা, ডিএফও সানিদেও চৌধুরী ও সোনাই সার্কল অফিসার সুদীপ নাথ সহ অন্যান্য আধিকারিকরা এবং মিজোরামের পক্ষে আইআর ব্যাটালিয়ন কমান্ডেন্ট এল লালডোংকিম, কলাশিব পুলিশসুপার ভানলালফাকা রাল্তে ও ভাইরেংতি এসডিও সিভিল লাস্ক লালমিংপুইয়া। এদিন লায়লাপুরে ছিলেন এডিজিপি মুকেশ আগরওয়াল, ডিআইজি দিলীপকুমার দে ও জেলাশাসক কীর্তি জাল্লি। এডিজিপি মুকেশ আগরওয়াল জানান, বৈঠকে নিরাপত্তার বেষ্টনীতে লরি গুলো চলাচল করতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।