28 C
Guwahati
Saturday, March 25, 2023
More

    ভয়াবহ পরিস্থিতিতেই আসাম বিস্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত, বিক্ষোভ ছাত্রদের

    শিলচর, ১২ সেপ্টেম্বরঃ অতিমারীর ক্রমবর্ধমান ভয়াবহ পরিস্থিতিতে আসাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে স্নাতক (Non -CBCS ) চূড়ান্ত সেমিস্টারের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শনিবার শিলচরের বিভিন্ন কলেজের ছাত্র ছাত্রীরা এআইডিএসও’র আহ্বানে ক্ষুদিরাম মূর্তির পাদদেশে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে।বিক্ষোভ চলাকালে ছাত্র ছাত্রীরা বলে যে এই পদক্ষেপ ছাত্র ছাত্রীদের জীবনের সুরক্ষার প্রশ্নকে ফের গুরুত্বহীন করে দিল। সারা দেশে ও বিশেষ করে আসাম-এর স্বাস্থ্য ব্যবস্থার যখন বেহাল দশা, সরকারের গাফিলতির ফলে করোনা সংক্রমণের বৃদ্ধি হার যখন  ভয়াবহ, এমন সময়ে পরীক্ষা নেওয়ার নির্দেশ ছাত্র, শিক্ষক, অভিভাবক সহ সামগ্রিক জনজীবনের  পক্ষেই অত্যন্ত বিপজ্জনক।আসামের স্বাস্থ্যমন্ত্রী সম্প্রতি বলেছেন, রাজ্যে শুধু সেপ্টেম্বর মাসে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নব্বই হাজারেরও বেশি হবে। বিশাল সংখ্যক রোগীর চিকিৎসা পরিষেবা প্রদানের জন্য যথেষ্ট সংখ্যক আইসিইউ ও বেড হাসপাতালে নেই, এমনকি অক্সিজেন সিলিন্ডারের ঘাটতিও রয়েছে।তাঁর মতে, রাজ্যে আক্রান্ত অবস্থায় মৃত্যুর সংখ্যা কম হলেও, প্রায় এক হাজার রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই মারা গেছেন। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিতে ছাত্র ছাত্রীদের সংক্রমিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনাকে গুরুত্ব না দিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে পরীক্ষা দেওয়ার নির্দেশ কোনও অবস্থায় সঠিক হতে পারে না।এই অবস্থায় প্রয়োজন ছিল গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আলোচনা করে শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে জড়িত সবাইকে নিয়ে বিজ্ঞানসম্মত পদ্ধতিতে মূল্যায়নের নতুন নিয়ম উদ্ভাবন করা। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ  গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আলোচনা করার পথ পরিহার করে ছাত্রছাত্রীদের চরম বিপদের দিকে ঠেলে দিচ্ছে ।

    এআইডিএসও’র সর্ব ভারতীয় কমিটির পক্ষ থেকে বিভিন্ন রাজ্যের ছাত্র ছাত্রী, শিক্ষক ও শিক্ষানুরাগী জনগণের মতামতের ভিত্তিতে কিছু সুনিদৃষ্ট প্রস্তাব তৈরি করে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষামন্ত্রী ও ইউজিসি’র চেয়ারম্যান এর কাছে প্রেরণ করেছিল। তাতে  উল্লেখ করা হয়, স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে লিখিত পরীক্ষার কোনও বিকল্প নেই। কিন্তু করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের এই পরিস্হিতিতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বসে পরীক্ষা দেওয়া ছাত্র ছাত্রীদের জন্য মোটেই নিরাপদ নয়। তাছাড়া বহু ছাত্র-ছাত্রী এখনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বহু দূরে নিজেদের ঘরে রয়েছে। তাদের ফিরে আসার পথে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনাও যথেষ্ট। এদিকে লকডাউনের পূর্বে পাঠ্যক্রমের সামান্য কিছু অংশই পড়ানো সম্ভব হয়েছিল। এই পরিস্হিতিতে ছাত্র ছাত্রীদের শিক্ষাবর্ষ রক্ষা করা ও পরবর্তী পর্যায়ের পড়াশোনা, চাকরির সুযোগ ইত্যাদির প্রয়োজনে বিজ্ঞান ভিত্তিক বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতি অনুধাবন করা প্রয়োজন।

    বর্তমানে বহু ছাত্র ছাত্রী ও তাঁদের পরিবারের লোকজন আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছে, আসাম বিশ্ববিদ্যালয় কেম্পাস সহ বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোভিড কেয়ার সেন্টার হিসেবে কোরোনা রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা প্রদান করা হচ্ছে । এই অবস্থায় আসাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল পরিস্থিতির গুরুত্ব কেন্দ্র সরকার ও ইউজিসি’র কাছে তুলে ধরা। পাশাপাশি রাজ্যের বর্তমান মহামারিজনিত পরিস্থিতি সম্পর্কে কেন্দ্র সরকারকে কাছে বিশেষ পরিস্থিতিতে অবহিত করে বিশেষ ধরনের মূল্যায়ন পদ্ধতি গ্রহণ করার দাবি উত্থাপন করা। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছাত্র ছাত্রী ও ছাত্র সংগঠন, বুদ্ধিজীবি, শিক্ষাবিদ ও অতিমারি বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহন করে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিতে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করল না। তাই এদিন বিক্ষোভ চলাকালে ছাত্র ছাত্রীরা জোরালো দাবি উত্থাপন করে যে সংক্রমণের উর্দ্ধগতি থাকার এই মুহূর্তে নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতি উদ্ভাবন না করে ছাত্র ছাত্রীদের ২৯ সেপ্টেম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে পরীক্ষা দেওয়ার যে অযৌক্তিক নির্দেশ আসাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জারি করেছে তা প্রত্যাহার করতে হবে।  ছাত্র ছাত্রীদের জীবনকে চরম অনিশ্চয়তার দিকে ঠেলে দেওয়ার কোনও সিদ্ধান্ত একতরফা ভাবে গ্রহণ করা হলে ছাত্র-ছাত্রীরা মেনে নেবে না।

    Published:

    Follow TIME8.IN on TWITTER, INSTAGRAM, FACEBOOK and on YOUTUBE to stay in the know with what’s happening in the world around you – in real time

    First published

    ট্ৰেণ্ডিং