শিলচর, ২৮ জানুয়ারি : ব্যাংকের আধিকারিক পরিচয় দিয়ে এটিএম কার্ড ব্লক হওয়ার ভয় দেখিয়ে আনুষঙ্গিক সব তথ্য জেনে নেওয়ার পর অ্যাকাউন্ট থেকে অর্থ আত্মসাৎ। সাইবার অপরাধীরা এমন প্রক্রিয়া থেকে অনেক এগিয়ে এসে বর্তমানে প্রায় কোনও তথ্য জিজ্ঞেস না করেই হাতিয়ে নিচ্ছে অ্যাকাউন্টের অর্থ। গ্রাহকদের পক্ষে বোঝা সম্ভব হচ্ছে না কিছুই। এমন এক ঘটনায় শিকার হয়েছেন শিলচর সেকেন্ড লিংক রোডের বাসিন্দা পাল পদবীর এক শিক্ষিকা। স্রেফ ‘কুইক সার্ভিস অ্যাপ’ ডাউনলোড-এর পর ইনস্টল করিয়ে তার অ্যাকাউন্ট থেকে হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে ৫ লক্ষ টাকা।
গত মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৩০ মিনিট নাগাদ ওই শিক্ষিকার বিএসএনএল-এর সিম লাগানো মোবাইলে ফোন করে এক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি। লোকটি নিজেকে বিএসএনএল-এর কর্মী পরিচয় দিয়ে জানায়, শিক্ষিকার বিএসএনএল সিম চালু রাখতে হলে নতুন করে “কেওয়াইসি”জমা দিতে হবে। অন্যথায় “ব্লক” হয়ে যাবে সিম। এরপর সহজে “কেওয়াইসি”জমা করার জন্য “কুইক সার্ভিস অ্যাপ” ডাউনলোড ও ইনস্টল করতে বলে। শিক্ষিকার স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার অ্যাকাউন্টের সম্পর্কিত ব্যাংকের নথিতে রয়েছে বিএসএনএল-এর ওই নম্বরই।ব্যাংক থেকে অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত যাবতীয় মেসেজ আসে ওই নম্বরে। অ্যাপ ডাউনলোড করে ইনস্টল করার পর “কেওয়াইসি”আপলোড করতে না করতেই কয়েক দফায় শিক্ষিকার সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যায় ৫ লক্ষ টাকা।
এ ঘটনা নিয়ে শিক্ষিকা থানায় দায়ের করেছেন এজাহার। তিনি জানিয়েছেন, প্রথম তার সেভিংস অ্যাকাউন্টে থাকা ৫০ হাজার টাকা ট্রান্সফারের পর সেই অ্যাকাউন্ট-এর লিঙ্ক-এ থাকা ৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার ‘ফিক্সড ডিপোজিট (এফডিআর)ও লিকুইড করে ট্রান্সফার করা হয়। ব্যাপারটা এত দ্রুত ঘটে যায় যে, প্রথম দফায় টাকা ট্রান্সফারের মেসেজ আসার পরও তার পক্ষে কিছু করা সম্ভব হয়নি। অ্যাকাউন্ট থেকে এত টাকা উধাও হয়ে যাওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই ভেঙ্গে পড়েছেন ওই শিক্ষিকা।
এদিকে ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙ্গিয়ে অর্থ ট্রানস্ফার-কে ঘিরে সন্দেহ জেগে উঠেছে, এর পেছনে জড়িত থাকতে পারেন ব্যাংকের কেউ। শিলচর স্টেট ব্যাংকে এর আগেও এভাবে ফিক্সড ডিপোজিট লিকুইড করে অনেক গ্রাহকের লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু ধরা পড়েনি কেউ। সংশ্লিষ্ট সাইবার অপরাধীরা পার পেয়ে গেছে অবলীলায়।
আরো দেখুন : অপেক্ষার অবসান, ৬ ফেব্রুয়ারি শিলচর আসছেন ডাঃ রাকেশ পি গোপাল