শিলচর, ১৩ ফেব্রুয়ারি: ক্রমেই অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছে অসম-মিজোরাম আন্তঃরাজ্য সীমান্ত এলাকা। দক্ষিণ হাইলাকান্দির মিজোরাম সীমান্তের গল্লাছড়া ও কচুরতলে অসমের জমি জবরদখল করতে লাগাতার হামলা চালিয়ে আসছে মিজো দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার রাতে সেখানকার অ-মিজো বাসিন্দাদের বসতবাড়ি জালিয়ে ভস্মীভূত করার পর বুধবার থেকে গোটা এলাকা মিজো পুলিশ তাদের দখলে নিয়ে যায়। শুক্রবার সকালে অসমের জমি গল্লাছড়ায় মিজোরামের আইআর ব্যাটেলিয়নরা অস্থায়ী ক্যাম্প বসাতে প্রস্তুতি নিতে চাইলে অসম পুলিশ সরাসরি মিজো পুলিশকে বাধা দেয়। সম্মুখ সমরে দুই রাজ্যের পুলিশের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হলে তখন সমগ্র এলাকা জুড়ে এক যুদ্ধক্ষেত্রের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। অবশেষে মিজো পুলিশ ক্যাম্প নির্মাণ কাজ গুটিয়ে নিতে বাধ্য হয়। শুক্রবার এগারোটা নাগাদ সংগঠিত এই ঘটনায় গোটা দক্ষিণ হাইলাকান্দিতে চাঞ্চল্য বিরাজ করছে। দলে দলে লোক গল্লাছড়ায় প্রবেশ করতে থাকেন।
রাজ্য পুলিশের এডিজিপি মুকেশ আগরওয়ালের নির্দেশ অনুযায়ী প্রস্তাবিত গল্লাছড়ায় ক্যাম্প নির্মাণ করার কথা ছিল। কিন্তু মিজো পুলিশের রক্তচক্ষু অগ্রাহ্য করে কেউ সেখানে প্রবেশ করতে পারেনি। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলে হাইলাকান্দির অতিরিক্ত জেলাশাসক আনিছরছুল মজুমদার, কাটলিছড়ার সার্কেল অফিসার সুমা রায়, ডিএসপি নবনিতা দাস, রামনাথপুর থানার এসআই ত্রিদিপ কুমার বরা। এদিন শতাধিক মিজো আই আর ব্যাটেলিয়ন গল্লাছড়ায় অবস্থান করে। মিজোরামের পুলিশ প্রশাসন টহলরত অসম পুলিশ ও প্রশাসনিক আধিকারিককে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কচুরতল থেকে সড়ক নির্মাণ শুরু করে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় জেসিবি লাগিয়ে কচুরতল থেকে গল্লাছড়া অভিমুখে অগ্রসর হতে থাকে। এসময় রামনাথপুর থানার এসআই ত্রিদিপ বরা, সার্কেল অফিসার সুমা রায় ও ডিএসপি নবনিতা দাস দলবল নিয়ে বাধা দিতে যেতে চাইলে মিজো পুলিশ এক পা আগ বাড়তে দেয়নি। শুরু হয় আবারও বাকবিতণ্ডা। বিকেলের দিকে জেসিবি এসে পৌছে গল্লাছড়ায় একেবারে অসম পুলিশের নাকের ডগায়।
সন্ধায় মিজোরামের পুলিশ আধিকারিক ও প্রশাসনের কর্তারা গল্লাছড়ায় এস্কট পাইলট নিয়ে মহড়া দিয়ে পৌছেন গল্লাছড়ায়। সেখানে মিজো আইআর ব্যাটেলিয়নরা সারি বেধে প্যারেড করার পর তারা ফিরে যান। এদিকে, সীমান্তে উত্তপ্তকর পরিস্থিতির খবর ছড়িয়ে পড়তে চারদিকে থেকে বিভিন্ন দল সংগঠনের নেতা কর্মী সহ সাধারণ মানুষ জড়ো হন গল্লাছড়া গ্রামে। জানা গেছে, মিজোরাম প্রশাসন অবিলম্বে অসম পুলিশকে কচুরতল ছাড়ার নির্দেশ জারি করেছে। এই খবর পেয়ে রাতেই অসম পুলিশের এডিজিপি মুকেশ আগরওয়াল, ডিআইজি দিলীপকুমার দে, জেলাশাসক মেঘনিধী দাহাল কচুরতল যান।
আরো দেখুন : মেডিক্যালে নেই নিউরো বিভাগ, অকালে প্রাণ গেল শিল্পীর