কলকাতা, ২২ সেপ্টেম্বরঃ করোনা ভাইরাসকে সঙ্গে নিয়েই জীবন কাটাতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনেক আগে থেকেই এ কথা বলে আসছে। বাঙালিও করোনাকে সঙ্গে নিয়েই সাফল্যের সিঁড়ি বাইতে চায়। তাই এবারের পুজোর ফ্যাশনেও স্থান পেল করোনা। বিজ্ঞানীদের অনুবীক্ষণে ধরা পড়া এই মারণ ভাইরাসের নানান ছবি এখন আতঙ্কের আরেক নাম।কিন্তু সেটাই উঠে এল বাহারি শাড়িতে। অনেকেরই।শ্রীরামপুরের একটি বুটিকের ডিজাইনাররা তৈরি করেছেন করোনা শাড়ি। নানান কিসিমের নকশায় এই মারণ ভাইরাসের ছবি উঠে এসেছে শাড়ির গায়ে। কোনও শাড়িতে লেখা ‘দো গজ কি দূরি-রহনা হ্যায় জরুরি’, কোনওটায় আবার ‘মাস্ক ছাড়া বাইরে নয়।’ বাঙালি ললনার অঙ্গ শোভায় এবার এমনভাবেই উপস্থিতি দুনিয়া কাঁপানো করোনা ভাইরাসের।
মার্চের শেষ থেকে করোনা রুখতে লকডাউন শুরু হয় দেশে। তারপর থেকেই থমকে গেছে অর্থনীতির চাকা। আনলক পর্বেও এখনও ঘুরে দাঁড়ানোর মতো জায়গা তৈরি হয়নি। সার্বিক মনখারাপের মেঘ সর্বত্রই। তারমধ্যেই পুজো প্রায় এসে গেল। তবুও জৌলুস প্রায় শূন্যতেই। এ সময় তুঙ্গে থাকে পুজোর প্রস্তুতি। পুজো কমিটিগুলির ব্যস্ততা, মৃত্শিল্পীদের ব্যস্ততা, দোকানবাজারে নতুন পোশাক কেনার ভিড় সবমিলিয়ে রীতিমতো জমজমাট পরিবেশ। এবার কিন্তু সে ব্যস্ততার ছবি পুরোপুরি উধাও। বরং সর্বত্রই হাহাকার। এই পরিস্থিতিতেও শ্রীরামপুরের ওই বুটিকের ম্যানিকুইনের গায়ে জড়ানো করোনা শাড়ি নাকি ভিড় টানছে ভালই। শাড়ি কিনতে আসা অনেকেই জানিয়েছেন, এতদিন করোনার সঙ্গে শুধুই আতঙ্ক জড়িয়েছিল। শাড়ির গায়ে এর নকশা কিন্তু বেশ ভালই লাগল। দোকানের মালিক শুভাশিস দে বলেন, ”এবার করোনা পরিস্থিতিতে বছরভর মার খেয়েছে ব্যবসা। প্রতিবছরই পুজোর সময় নতুন কিছু উদ্ভাবনের চেষ্টা করি। এবার আতঙ্কের করোনাকে নিয়েই নকশা ভাবি আমরা। মহালয়ার পর থেকেই দেখছি করোনা শাড়ি কিনতে আসছেন অনেকেই। ডিজাইনে খুশি ক্রেতারা।” তিনি জানান, ভাইরাসের নকশা শাড়িতে ব্যবহারের পাশাপাশি এর মাধ্যমে সামাজিক বার্তাও পৌঁছে দিচ্ছেন তাঁরা। মাস্ক ব্যবহার, সামাজিক দূরত্ব রক্ষা, এ সমস্তই শাড়িতে তুলে ধরা হয়েছে। পুজোর মরসুমে বাইরে বের হবেন অনেকেই। তাই সংক্রমণ বাড়ার প্রবল সম্ভাবনা। শাড়িতে ঘোষিত বার্তা কিছুটাও যদি সচেতন করে মানুষকে, সেটাও হবে বাড়তি পাওনা।