শিলচর, ১৮ ডিসেম্বরঃ প্রাক্তন সাংসদ নুরুল হুদার পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করল সিপিএম কাছাড় জেলা কমিটি। এ উপলক্ষে দলের জেলা দফতর মালুগ্রামের শহিদ স্মৃতি প্রাঙ্গণের অচিন্ত্য ভট্টাচার্য-গোপেন রায় ভবনে এক স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন দলের রাজ্য কমিটির অন্যতম সদস্য রেজামন্দ আলি বড়ভুইয়া।
স্মরণ সভায় প্রারম্ভিক বক্তব্য রাখতে গিয়ে সিপিএম কাছাড় জেলা সম্পাদক দুলাল মিত্র বলেন, কাছাড় জেলার রাজনৈতিক ইতিহাসে উচ্চশিক্ষা, মূল্যবোধ, দৃঢ় ব্যক্তিত্ব, নীতিনিষ্ঠতা প্রভৃতি ক্ষেত্রে নুরুল হুদা ছিলেন অনন্য। তাঁর মতো সেকুলার ব্যক্তি খুব কমই খোঁজে পাওয়া যায় । তাঁর জন্ম ১৯৩০ সনে । বাবা মোহাম্মদ আলি ব্রিটিশ আমলে ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন। নুরুল হুদা অত্যন্ত মেধাবী ছাত্র ছিলেন। ১৯৪৬ সালে শিলচর সরকারি বালক বিদ্যালয় থেকে প্রথম বিভাগে মেট্রিক পাশ করেন। এরপর কলকাতা সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে প্রথম বিভাগে আইএসসি পাশ করে যাদবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হন। বিভিন্ন কোম্পানিতে চাকরির পাশাপাশি কলকাতার সুরেন্দ্রনাথ সান্ধ্য আইন কলেজ থেকে এলএলবি পাশ করেন। দুলাল মিত্র বলেন, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়ার সময় তিনি সারা ভারত ছাত্র ফেডারেশনের সঙ্গে যুক্ত হন। কাছাড় জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের সন্তান নুরুল হুদার যাদবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ছাত্র সংসদের সম্পাদক হওয়া বা বঙ্গীয় প্রাদেশিক ছাত্র ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক হওয়া কম গর্বের বিষয় ছিল না। ১৯ ৪৯ সনে তিনি কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হন। ১৯৬৬ সালে আইনের স্নাতক হবার পর তিনি কাছাড় জেলায় চলে আসেন। শিলচরে আইন ব্যবসায় যুক্ত হন। কাছাড় জেলায় সিপিএম দলের সঙ্গে যুক্ত হয়ে দলের গণ ভিত্তি গড়ে তোলেন। প্রাক্তন সাংসদ নুরুল এবং পরে বিধায়ক নির্বাচিত হন। পরে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন।
সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিপিএমের প্রাক্তন কাছাড় জেলা সম্পাদক সমীরণ আচার্য, চুনিলাল ভট্টাচার্য, প্রশান্ত বসু, গোপাল ভুমিজ, দেবব্রত দাশ, পঙ্কজ পাল প্রমুখ। সমীরণ আচার্য বলেন, নুরুল হুদা ছিলেন আপোষহীন কমিউনিস্ট। নীতি ও আদর্শের ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অবিচল। বর্তমান প্রজন্মের কাছে তিনি হলেন অনুসরণীয়। দেবব্রত দাশ তাঁর বক্তব্যে বলেন, সিপিএম কাছাড় জেলা কমিটি প্রশাসন ও পুর কর্তৃপক্ষের কাছে প্রয়াত নুরুল হুদার নামে শিলচরের কোনও একটি রাস্তার নামকরণ করার দাবি করে সেই প্রস্তাব দেন।
আরো দেখুন : অযোধ্যায় মসজিদের শিলান্যাস ২৬ জানুয়ারি, ঘোষণা ট্রাস্টের