নয়াদিল্লি, ১০ অক্টোবরঃ করোনা পরিস্থিতি ও লকডাউনের কারণে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণের জন্য মোরাটোরিয়ামের মেয়াদে ইএমআই-এর উপর যে সুদ বকেয়া হয়েছে তা গ্রাহককে দিতে হবে না বলে গত সপ্তাহে সুপ্রিম কোর্টে জানিয়েছিল মোদি সরকার। কেন্দ্র সরকার সেই খরচ বহন করবে। তবে সরকারের এই সিদ্ধান্ত ‘আশাব্যঞ্জক নয়’ বলেই জানিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। এবার কেন্দ্র আদালতে স্পষ্ট জানিয়ে দিল, ‘বিভিন্ন সেক্টরে এর থেকে বেশি ছাড় দেওয়া তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’ কেন্দ্রের তরফে আরও জানানো হল, দেশের রাজস্ব নীতিতে নাক গলানো উচিত নয় সুপ্রিম কোর্টের। কেন্দ্রের তরফে একটি হলফনামা দিয়ে এই কথা জানানো হয়েছে।
হলফনামায় সরকার জানিয়েছে, ‘রাজস্ব নীতি নির্ধারণ করা কেন্দ্রের দায়িত্ব। কোনও আদালতের উচিত নয় কোন ক্ষেত্রকে কী ছাড় দেওয়া হবে সেই বিষয়ে নাক গলানো। ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণের জন্য মোরাটোরিয়ামের মেয়াদে ইএমআই-এর উপর যে সুদ বকেয়া হয়েছে তাতে ছাড় দেওয়া ছাড়া এই মুহূর্তে আর ছাড় দেওয়া সম্ভব নয়। নইলে তা দেশের জাতীয় অর্থনীতি ও ব্যাঙ্কিং পরিষেবার উপর প্রভাব ফেলবে।’ গত সোমবার সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হয়, সুদের উপর ছাড় নিয়ে কেন্দ্র যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা আশাব্যঞ্জক নয়। তাই এই বিষয়ে কেন্দ্রকে আরও ভাবনাচিন্তা করার পরামর্শ দেয় শীর্ষ আদালত। ব্যাঙ্কগুলির অবস্থানের বিরোধিতা করে সুপ্রিম কোর্টে যে মামলা হয়েছিল সেগুলির শুনানির ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্ট বলে, ‘কেন্দ্র আবেদনকারীদের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পর্যালোচনা করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে দেশে তীব্র অর্থনৈতিক সংকট শুরু হওয়ায় নির্দিষ্ট মেয়াদের ঋণের উপর মোরাটোরিয়াম ঘোষণা করেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তাতে বলা হয়েছিল, কোনও গ্রাহক চাইলে তিন মাস ঋণের কিস্তি পরিশোধ করা স্থগিত রাখতে পারেন। পরে মোরাটোরিয়ামের মেয়াদ আরও তিন মাস বাড়ানো হয়। কিন্তু রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলি গ্রাহকদের স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, কিস্তির টাকা দেওয়া বন্ধ করলে বকেয়া আসল ও সুদ উভয়ের উপরেই ওই মেয়াদের জন্য সুদ দিতে হবে। ব্যাঙ্কগুলির এই অবস্থানের বিরোধিতা করে মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। এ ব্যাপারে গত ২৮ সেপ্টেম্বর সরকারের চূড়ান্ত ব্যাখ্যা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট সেদিন কেন্দ্রীয় সরকারকে এ জন্য আরও সাতদিন সময় দেয়। বিচারপতিরা বলেন, কোভিডের বাজারে গ্রাহক তথা ঋণ গ্রহীতাদের সুরাহা দেওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে সাতদিনের মধ্যে পরিকল্পনা পেশ করতে হবে মোদি সরকারকে। তারপরেই মোদি সরকারের তরফে সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা পেশ করা হয়।মঙ্গলবার এই মামলার পরবর্তী শুনানি রয়েছে।