৪ জানুয়ারি : ইতিহাস বিকৃত করতেই মণিপুর রাজ্যের জিরিবাম জেলায় বিভিন্ন স্থানের নাম বদলের উদ্যোগ নিয়েছে সে রাজ্যের সরকার, এমন অভিযোগ আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল। এ বার দেখা গেল, এই আশঙ্কাই অবশেষে সত্যি হতে চলেছে। জিরিবাম জেলার বেশ কিছু বাঙালি অধ্যুষিত স্থানের নাম পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে মনিপুর সরকার। অথচ বাংলা ভাষায় থাকা এই স্থানগুলির নাম বদলের আগে কোনও বাঙালি সংগঠনকেই ডাকা হয়নি। কেবল মণিপুরি কিছু সংগঠন ও ক্লাবের পরামর্শ নিয়েই নয়া নামকরণ করা হয়েছে এসব জায়গার।
এক সপ্তাহ আগে জিরিবামের জেলাশাসক এক বৈঠক ডেকেছিলেন স্থানীয় বিধায়ক, জেলা পরিষদের অধ্যক্ষ ও প্রশাসনের অন্য কর্তাদের নিয়ে। সেখানে মৈতৈ কনভেশন লুপ, মৈতৈ নাহা ক্লাব ও জিতি কান অপুংবা লুপ নামের মণিপুরি সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদেরও ডাকা হয়। কিন্তু বাঙালি কোনও সংগঠনকে এই বৈঠকের আমন্ত্রণ পাঠানো হয়নি। ওখানে বলা হয়, উল্লিখিত সংগঠনগুলির পরামর্শ অনুযায়ী কিছু স্থানের নাম পরিবর্তনের অনুমোদন জানাচ্ছে জেলা প্রশাসন। এই স্থানগুলি গ্রাম পঞ্চায়েতের যেসব ওয়ার্ডে পড়েছে, ওই কাউন্সিলার-সহ পঞ্চায়েত প্রধানদের বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন থেকে নূতন নামে কোনও অসুবিধা থাকছে না।
জিরিবামের জেলা প্রশাসন মোট ৩১টি স্থানের নাম পরিবর্তন করেছে। এর মধ্যে অধিকাংশ স্থানের নামই আগে বাংলা ভাষায় ছিল। এখন সবগুলিই বদল হয়ে মণিপুরে ভাষায় দেওয়া হয়েছে। যেমন বাবুপাড়ার নাম হয়েছে লামলেন, নতুন দুর্গাপুরের নাম লামদাই খুনোই, মধুপুর হয়েছে লেইকইপুং, কালীনগরের নয়া নাম হচ্ছে লাইরেম্বি লেইকাই ইত্যাদি। এই এলাকাগুলিতে প্রচুর বাঙালি লোকেদের বসবাস। কিন্তু তাদের মতামত না নিয়ে একতরফা ভাবেই ওই স্থানগুলির নাম পরিবর্তন করা হয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন বাঙালি সংগঠন মনিপুর সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে।
আরো দেখুন : তুষারপাতে ঢেকে রয়েছে ডিমা হাসাও-র দুটি গ্রাম, পর্যটকদের ভিড় বাড়ছে