শিলচর, ১৪ ডিসেম্বর : দিল্লির কৃষক আন্দোলনের ঢেউ ক্রমশ গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ছে। বিভিন্ন কৃষক সংগঠনের ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার তাদের সমর্থনে শিলচরেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন বিভিন্ন সংগঠনের কর্মকর্তারা। এদিন শিলচরের ক্ষুদিরাম মুর্তির পাদদেশে সিআইটিইউ, এআইইউটিইউসি, এআইসিসিটিইউ, এনটিইউআই, ইডব্লিউটিসিসি, আসাম মজুরী শ্রমিক ইউনিয়ন, টিইউসিসি, ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনি, এআইকেকেএমএস, সারা ভারত কৃষক সভা ইত্যাদি সংগঠনের কর্মীরা দিল্লির কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। বিক্ষোভ স্থলে দিল্লির কৃষক আন্দোলনে মৃত্যু হওয়া কৃষক সেনানীদের স্মৃতিতে বেদী স্থাপন করে এতে মাল্যদান করেন সিআইটিইউ-র পক্ষে অভিজিৎ গুপ্ত, এআইইউটিইউসি’র মাধব ঘোষ, এআইসিসিটিইউ-র পক্ষে অসীম নাথ, অসম মজুরী শ্রমিক ইউনিয়ন এর পক্ষে ধরিত্রী শর্মা, সারা ভারত কৃষক সভার রনজয় দাস, ফোরাম ফর সোশ্যাল হারমনি’র ফারুক লস্কর, এনটিইউআই-র বলরাম বিশ্বাস, ইডব্লিউটিসিসি-র প্রতিমা দাস পাল, টিইউসিসি-র রাজু দেবনাথ, ডিওয়াইএফআই-র রাজেশ সরকার, এআইডিএসও’র পক্ষ থেকে হিল্লোল ভট্টাচার্য, এনআইএসএ-র পক্ষে সারওয়ার জাহান, এআইডিওয়াইও’র পক্ষে পরিতোষ ভট্টাচার্য, এআইকেকেএমএস এর সজলকান্ত দাস, এআইএমএসএস-র খাদেজা লস্কর প্রমুখ।

ক্ষুদিরাম মূর্তির পাদদেশে উপস্থিত বিক্ষোভকারীদের সামনে বক্তব্য রাখেন সমীরণ আচার্য, সুব্রতচন্দ্র নাথ, মানস দাস, মৃণালকান্তি সোম, অসীম নাথ, রেজামন্দ আলি বড়ভুইয়া, অরিন্দম দেব প্রমুখ। বক্তারা বলেন, দিল্লির কৃষক আন্দোলন সারা বিশ্বে সাড়া জাগিয়েছে। ভারত সরকারের যদি কৃষকদের প্রতি সামান্যতম দরদ বোধ থাকত তাহলে তারা কৃষক বিরোধী তিনটি কৃষি বিল কৃষক বিক্ষোভের দাবি মেনে প্রত্যাহার করে নিত। কিন্তু চরম কৃষক বিরোধী ও কর্পোরেটদের স্বার্থরক্ষাকারী বর্তমান বিজেপি সরকার কৃষক সংগঠনগুলির সঙ্গে আন্দোলনের চাপে আলোচনায় বসলেও তাদের দাবি মানতে নারাজ। যার পরিণতিতে আজ দীর্ঘ ১৯ দিন ধরে দিল্লির তীব্র ঠান্ডাকে উপেক্ষা করেও লাখো কৃষক আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে দেশের খ্যাতনামা ব্যক্তিরা তাদের প্রাপ্ত সরকারি পুরস্কার পর্যন্ত ফিরিয়ে দিচ্ছেন। তারা বলেন, এই আন্দোলন শুধু কৃষকের স্বার্থ রক্ষার আন্দোলন নয়, এই আন্দোলন দেশের আপামর জনসাধারণের।কারণ কৃষি আইন প্ৰত্যাহার না হলে আগামী দিনে ভারতের কৃষকদের অবস্থা একদিকে যেমন চূড়ান্ত অবনমিত হবে, অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পাবে। কৃষক সহ দেশের জনগণের উপর নেমে আসা এই ভয়াবহ আক্রমণের বিরুদ্ধে এখন দেশব্যাপী গণতান্ত্রিক আন্দোলন গড়ে তোলে সরকারকে বাধ্য করার বাইরে অন্য কোনও বিকল্প নেই বলেও বক্তারা মত ব্যক্ত করেন।
এদিন বামপন্থী ছাত্র-যুব সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে একটি মিছিল মালুগ্রামের শহিদ ভবন থেকে বেলা এগারোটা নাগাদ বের হয়ে ইটখোলার বিজেপির কার্যালয়ের সামনে হয়ে ক্ষুদিরাম মূর্তির পাদদেশ পৌঁছায়। মিছিলে উপস্থিত দেবজিত গুপ্ত, গৌর চন্দ্র দাস, পল্লব ভট্টাচার্য, প্রজ্ঞা অন্বেষা ও রুমি বেগম লস্কর বলেন, দিল্লির কৃষক আন্দোলনের সমর্থনে দেশের ছাত্র–যুবরা পথে নেমেছে।