শিলচর, ১৭ সেপ্টেম্বর : অসমের দুই ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান কাছাড় এবং নগাঁও কাগজ কলকে দেউলিয়া ঘোষণা করার জন্য ‘ন্যাশনাল কোম্পানি ল ট্রাইবুনাল’-এর অন্তিম শুনানি ছিল গত ১৪ সেপ্টেম্বর। কিন্তু জনগণের প্রবল আপত্তিতে তা ২১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। অতি উত্কৃষ্ট মানের কাগজ উত্পাদনে সক্ষম এই দুই শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে সরকার ব্যক্তিগত মালিকানার হাতে তুলে দিতে চাইছে। সরকার দুই কাগজ কলের শত শত শ্রমিক কর্মচারী এবং তার সাথে যুক্ত হাজার হাজার মানুষের কথা বিবেচনা না করে শুধু বেসরকারি মালিকদের লাভের উদ্দেশ্যে তা ব্যক্তিগত খণ্ডে পুঁজিপতিদের কাছে বিক্রি করতে চাইছে বলে অভিযোগ। তাই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার বার বার কাগজ কল চালুর প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনও ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।কার্যত সরকার ব্যক্তিগত খণ্ডের হাতে তুলে দিতেই নানা ধরনের টালবাহানা করছে। ৪৫ মাসের বকেয়া না পেয়ে ৭১ জন শ্রমিক ও কর্মচারী ইতিমধ্যেই মারা গেছেন। তার মধ্যে কয়েকজন আত্মহত্যা পর্যন্ত করেছেন। কিন্তু সরকার সব জেনেও না জানার ভান করে আছে। যে সব শ্রমিক এখনও বেঁচে রয়েছেন তাঁরাও এখন প্রায় পথের ভিখারিতে পরিণত হতে চলেছেন। তাই অসমের বন্ধ দুটি কাগজ কল পুনরায় সচল করার দাবিতে আগামী ১৮ আগস্ট এসইউসিআই (কমিউনিস্ট)-এর অসম রাজ্য কমিটির আহ্বানে রাজ্যব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। শিলচরেও একই দাবিতে তাঁরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করবেন বলে জানিয়েছেন দলের কাছাড় জেলা কমিটির সম্পাদক ভবতোষ চক্রবর্তী।
এসইউসিআই (কমিউনিস্ট)-এর রাজ্য সম্পাদক চন্দ্রলেখা দাস জানিয়েছেন, শ্রমিক কর্মচারীদের কথা চিন্তা না করে সরকার আসন্ন রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য উন্নয়নমূলক নানা প্রকল্পে অর্থ বরাদ্দ না করে জনগণের করের টাকা ভোট ধরে রাখতে জনসাধারণের মধ্যে সরাসরি বিলি করছে। রাজ্য সরকারের শিল্পায়ন, বেকার সমস্যার সমাধান ও বন্ধ কাগজ কল পুনরায় চালু করার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি জনগণের সামনে পরিষ্কারভাবে ধরা পড়েছে। আমরা কাগজ কল দুটোর লিকিউডেশন বন্ধ করার দাবি জানানোর পাশাপাশি উভয় কারখানা অবিলম্বে চালু করতে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের তরফে গৃহীত প্রস্তাব সর্বজনীন করতে দাবি জানাচ্ছি। উভয় কাগজ কল পুনর্বার চালু করতে সরকারের উপর তীব্র চাপ সৃষ্টির জন্য দল মত নির্বিশেষে তীব্র গণ-আন্দোলন গড়ে তুলতে সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তিনি।