শিলচর, ১২ ফেব্রুয়ারি : করোনা এখনও পুরোপুরি দমে যায়নি। তবে বিগত সালের মতো ভয়াবহতা নেই। করোনাবর্ষ ২০২০ সালে জনজীবনে অনেক দুর্ভোগ নেমে এলেও কাছাড়ে অন্যান্য জ্বরের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ছিল অনেকটাই স্বস্তিদায়ক। ওই বছরে জেলায় ডেঙ্গি, জাপানিজ এনকেফেলাইটিজ ( জে ই) ইত্যাদির প্রকোপ ছিল উল্লেখযোগ্য হারে কম। স্বাস্থ্য বিভাগের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২০ সালে জেলায় ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র ১০ জন, ঘটেনি কোনও মৃত্যু। জাপানিজ এনকেফেলাইটিজ-এ আক্রান্ত হয়েছিলেন ৬ জন। তবে, দুর্ভাগ্যবশত এরমধ্যে মৃত্যু ঘটেছে ৩ জনের। ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ এবং অ্যকিউট এনকেফেলাইটাজ সিনড্রোম (এ ই এস)-এ ৩২। ডেঙ্গির মরশুম জুন-জুলাই থেকে নভেম্বর-ডিসেম্বর পর্যন্ত, জেই-র প্রকোপ থাকে জুন-জুলাই থেকে মাস তিনেক।
গতবছর ডেঙ্গি, জেই এসব জ্বরের প্রকোপ কম থাকা নিয়ে জেলার চিফ মেডিক্যাল অ্যান্ড হেলথ অফিসার (সিডি) ডা: বিমলজ্যোতি দেব শিকদারের বক্তব্য, দেখা গেছে সাধারণত এ অঞ্চলে এসব জ্বর বয়ে আসে কাজের সূত্রে ভিন রাজ্যে থাকা লোকেদের মারফত। বিশেষত বড় বড় শহরে এ অঞ্চলের যারা শ্রমিকের কাজ করেন, তারাই হয়ে উঠেন এসব জ্বরের বাহক। ২০২০-এ করোনা পরিস্থিতিতে এসব জ্বরের মরশুম ঠিকমতো শুরু হওয়ার আগেই বাড়ি ফিরে আসেন বাইরে কাজে থাকা লোকেরা। আর ভরা মরশুমের মাঝে যারা এসেছেন, করোনাকে ঘিরে সতর্কতার দরুন ডেঙ্গি বা জে-ই তাদের মধ্যে খুব একটা দানা বাঁধতে পারেনি। কথার সূত্রে ডা: দেব শিকদার অবশ্য এটাও স্বীকার করেন, অন্যান্য বছর যেখানে জ্বর হলেই লোকজন হাসপাতাল বা বেসরকারি চিকিৎসকদের কাছে যেতেন, সেখানে করোনা পজিটিভ হওয়ার ভয়ে অনেকেই এড়িয়ে গেছেন তা। তাই হয়তো করোনা ছাড়া অন্যান্য রোগে যারা আক্রান্ত হয়েছিলেন তাদের সবাইকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি।
তিনি জানান, মশাবাহিত বিভিন্ন জ্বরের প্রকোপ রুখতে বর্তমানে জেলায় ওষুধযুক্ত মশারি বিতরণ করা হচ্ছে। জেলার ৭টি ব্লকে মোট ১ লক্ষ ৩ হাজার ৮৭২ জন হিতাধিকারির মধ্যে মশারী বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশকেই ইতিমধ্যে দিয়ে দেওয়া হয়েছে মশারী।
আরো দেখুন : মিক্সপ্যাথি : কেন্দ্রের নীতির প্রতিবাদে অনশনে চিকিৎসকরা