শিলচর, ২৫ আগস্ট: দল বিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগ এনে কংগ্রেস “শো-কজ” করেছে রাজদীপ গোয়ালা ও রুমি নাথকে। লক্ষীপুরের বর্তমান বিধায়ক রাজদীপ ও বড়খলার প্রাক্তন বিধায়ক রুমি নাথ কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন। এমন চর্চা চলছে বেশ কিছুদিন ধরেই। কংগ্রেস দুজনকে শোকজ করেছে গেরুয়া দলের প্রতি নরম মনোভাবের সূত্র ধরেই। এই দুজনের পাশাপাশি কংগ্রেসের আরও এক যুবনেতা আলগাপুরের প্রাক্তন বিধায়ক রাহুল রায়ও গায়ে গেরুয়া রং লাগাতে মুখিয়ে রয়েছেন বলে চর্চা রয়েছে রাজনৈতিক মহলে। তবে রাজদীপকে স্বাগত জানাতে গেরুয়া দল মানসিকভাবে তৈরি হলেও অন্য দুজনের পথে রয়ে গেছে বিস্তর কাঁটা।
জানা গেছে, রুমি-রাহুলকে নিয়ে বিজেপির বরাক উপত্যকার নেতৃত্ব মোটেই আগ্রহী নন। এই দুজন দলে এলে বাড়বে টিকিটের দাবিদারের সংখ্যা। এর ওপর আবার রয়েছে দুজনের ইমেজ-জনিত সমস্যা। এই দুয়ের যোগফলে স্থানীয় নেতৃত্ব দুজনকে ঘিরে আগ্রহী নয় মোটেই। স্থানীয় নেতাদের মধ্যে যারা আগামী বিধানসভা নির্বাচনে টিকিটের স্বপ্ন মনে পুষে রেখে এগোচ্ছেন, মূলত তারাই দুজনের দলে আগমনের পথ কণ্টকাকীর্ণ করে তুলতে প্রভাবিত করতে চাইছেন অন্যদের। আর তাদের এই প্রয়াস যে ব্যর্থ হচ্ছে এমনও নয়। দল অন্তপ্রাণ অনেকেই, এতে সাড়া দিয়ে নেমে গেছেন রুমি-রাহুলের আগমন রুখার অভিযানে। বড়খলার কিছু দলীয়কর্মী তো প্রকাশ্যেই রুমি নাথের আগমনের বিরোধিতা করে দরবার করতে শুরু করেছেন দলীয় শীর্ষ নেতৃত্ত্বের কাছে।
কেন রুমি-রাহুলের আগমনের বিরোধিতা? এ নিয়ে আপাতত টিকিট প্রত্যাশী নয় কাছাড়ের এমন এক জেলা স্তরের নেতার মন্তব্য, ওদের বিগত দিনের কর্মের “বিষফল” কেন হজম করবে দল? দলে এমনিতেই নেতার কোনও অভাব নেই, এদের এনে অযথা সমস্যা সৃষ্টির কোনও মানে হয় না। বর্তমানে যারা কংগ্রেসের গলার কাঁটা, সেই দুই কাঁটা গিলে কেন সমস্যায় পড়তে যাবে দল? তাদের এই মনোভাবের কথা যে রাজ্য নেতৃত্বকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে তাও স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন ওই জেলা স্তরের নেতা।স্থানীয় নেতারা এভাবে দুজনকে ঘিরে আপত্তির কথা জানালেও রাজ্য নেতৃত্ব কি দুজনকে নিয়ে কিছু ভাবছে? এ নিয়ে রাজ্যস্তরের এক নেতার কথায়, রাজদীপ গোয়ালা যে দলে আসছেন এটা প্রায় নিশ্চিত। শুধু কোন আসনে তাকে টিকিট দেওয়া হবে প্রশ্ন রয়ে গেছে এ নিয়ে। কিন্তু রুমি-রাহুলের ব্যাপারটা অনেকটাই একতরফা প্রেমের মতো। হয়তো দুই-একজন রাজ্য স্তরের নেতার সঙ্গে তাদের অন্তরঙ্গতা রয়েছে। এই সম্পর্ককে কাজে লাগিয়ে তারা চাইছেন দলে ভিড়তে। কিন্তু দলে ভিড়তে গেলে তো সিংহভাগেরই আনুকূল্য পেতে হবে তাদের। শেষ পর্যন্ত কি সম্ভব হবে তা। রাজ্য স্তরের ওই নেতার কথায়, রুমিকে নিয়ে তো সংঘ পরিবারও সম্পূর্ণ নিমরাজি।
রাজদীপ গোয়ালা সম্পর্কে জানা গেছে, তিনি দলে ভিড়ার পর লক্ষীপুর আসনেই ফের লড়তে আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন।কিন্তু দলের পক্ষ থেকে তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে লক্ষীপুরের বদলে উধারবন্দে মনোনিবেশ করতে। কিন্তু পৈত্রিক উত্তরাধিকারের সূত্রে পাওয়া লক্ষ্মীপুর আসনে তার দখলদারি যাতে বহাল থাকে এর জন্য এখনও দরকষাকষি করে চলেছেন তিনি। এখানেই আটকে আছে দলে যোগ দেবার আনুষ্ঠানিক ঘোষণাটা।এদিকে রুমি-রাহুলকে ঘিরে স্থানীয় নেতাদের আপত্তি নিয়ে দলের জেলা সভাপতি কৌশিক রাইকে জিজ্ঞেস করলে, তিনি সরাসরি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে বলেন, রাজ্য নেতৃত্ব এখনও তাদের কাছে এ নিয়ে কোনও মতামত চান নি। চাইলে অবশ্যই তা জানিয়ে দেওয়া হবে।
একতরফা গেরুয়া প্রেম! বিজেপি-র একটা বড় অংশই রুমি-রাহুলকে চাইছে না দলে
Published:
First published